আনু আনোয়ার, পটুয়াখালী প্রতিনিধিঃ
পর্যটন মৌসুমের শুরুতেই সাগরকন্যা খ্যাত কুয়াকাটা সৈকত এখন শ্রীহীন হয়ে পড়েছে। জেলেদের জাল,নৌকা রাখা হচ্ছে ছাতা বেঞ্চের সংলগ্ন। জাল শুকানো হচ্ছে যত্রতত্র ভাবে। জালের দূর্গন্ধে পর্যটকরা বমি করে দিচ্ছে। মাছ শুকানো হচ্ছে যেখানে সেখানে। অন্যদিকে কুয়াকাটা সৈকত এখন বস্তিবাসীর দখলে চলে যাচ্ছে। সাদা বালুর চরে যত্রতত্র অসংখ্য নতুন ঝুপড়ি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। দুই মাস অতি বাহিত হলেও অপসারণ করা হয়নি ঘরগুলো।ফলে শ্রীহীন হয়ে পরেছে ভ্রমণ পিপসু দের আকর্ষণীয় সমুদ্র সৈকতটি। ময়লা আর্বজ নায় নাকাল গোটা সৈকত দেখে ক্ষোভ প্রকাশ করছে বেড়াতে আসা পর্যটকরা।সরেজমিনে জানাগেছে, বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ রক্ষায় ৪৮নং পোল্ডারে বেড়িবাঁধ সংস্কারে করার জন্য বিশ্ব ব্যাংকের অর্থায়নে চীনা সিআইসও কোম্পানী কাজ করছে। ফলে বেড়িবাঁধে বসবাসকারীদের ক্ষতিপূরণ নিয়ে স্থাপনা অপসারণ করা হয়েছে। যার ফলে রাস্তার উপরে থাকা ছোট ছোট ঘরগুলো সাদা বালুর চরে গিয়ে আবার ঘর নির্মাণ করে বসবাস শুরু করেছে। এ বিষয়ে কুয়াকাটা পৌরসভার মেয়র কাউন্সিলররা নিষেধ করা স্বত্ত্বেও প্রায় শতাধীক পরিবার সৈকতে ঘর তুলে বসবাস শুরু করেছে। পর্যটন মৌসুমের এমন নোংরা পরিবেশ দেখে পর্যটকরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। দ্রুত এ ঝুপড়ি ঘর ও জিরো পয়েন্ট থেকে নৌকা জাল অপসারণ না করলে কুয়াকাটা থেকে পর্যটকরা মুখ ফিরিয়ে নিতে পারে এমন আশংকা করেছেন ট্যুরিজম ব্যবসায়ীরা।কুয়াকাটা চৌরাস্তা থেকে পশ্চিম দিকে বেড়িবাঁধের উপরে থাকা প্রায় শতাধীক ছোট ছোট ঘর ভেঙ্গে নিয়ে রাতের আধারে সৈকতে নির্মাণ করেছে। চীনা কোম্পানী ওই বেড়িবাঁধ সংস্কারের জন্য গত বছর কাজ শুরু করে। ক্ষতিপূরণের টাকা পেয়েও অনেক জেলে পরিবার সাগরে মাছ ধরার অজুহাতে বাধা নিষেধ উপেক্ষা করে সৈকতে বসবাস করেছেন। সরকারের পক্ষ থেকে একাধিকবার উচ্ছেদ অভিযান পরিচালনা করা হলেও কাজের কাজ কিছুই হচ্ছে না। ভূমি প্রশাস নের নজরদারী না থাকায় ওই ঘরগুলি নির্মাণ করছে স্থানীয় জেলেরা।ঢাকা থেকে বেড়াতে আসা পর্যটক তাসমিয়া ফারজানা এ প্রতিনিধিকে বলেন, কুয়াকাটার নাম শুনছি অনেক আগে। জায়গাটা নাকি অনেক সুন্দর। তাই দেখতে আসলাম। সৈকতে নেমেই যা দেখছি তা আশা করিনি। নোংরা পরিবেশ আর সাগর পাড়ে বস্তির মত ঘরবাড়ী, ছড়িয়ে ছিটিয়ে রাখা জেলেদের নৌকা, জাল থেকে দূর্গন্ধ ছড়াচ্ছে এসব দেখতে দেশী বিদেশী পর্যটক আসবে না।ট্যুর অপারেটর এসোসিয়েশন অব কুয়াকাটা (টোয়াক) বলেন, সৈকতের জিরো-পয়েন্টে জেলেদের জাল নৌকা,মাছ শুকানো হচ্ছে। সৈকতের পশ্চিম পাশে ঝুপড়ি ঘরবাড়ী নোংরা পরিবেশ পর্যটনের সাথে বেমানান দেখাচ্ছে। বিচ ম্যানেজমেন্ট কমিটি থাকলেও তদারকির অভাবে দিনে দিনে সৈকতের শ্রী হারিয়ে যাচ্ছে। বিশ্বের কোন সৈকতে এই পরিবেশ নেই।পর্যটকদের সুবিধার জন্য সুন্দর পরিবেশ করার জন্য এসব দ্রুত অপসারণ করা দরকার কুয়া কাটা প্রেসক্লাব সভাপতি এ. এম. মিজা নুর রহমান বুলেট বলেন, এসব দেখে মনে হচ্ছে কুয়াকাটায় পর্যটন বান্ধব জন প্রতি নিধি ও প্রশাসনের অভাব রয়েছে। তাদের দায়িত্বহীনতার কারণে বার বার শ্রীহীন হয় সৈকতটি। বীচ-ম্যানেজমেন্ট কমিটির কর্তাব্যক্তিরা মুখে সুন্দর সুন্দর কথা বললেও কাজের কাজ কিছুই করছেন না।এ ব্যাপারে কুয়াকাটা বীচ-ম্যানেজমেন্ট কমিটির সদস্য সচিব ও কলাপাড়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মুনিবুর রহমান বলেন, সৈকতের সাদা বালুতে কারো বসবাস করার সুযোগ নেই। সৈকতের ঝুপড়ি ঘরগুলো খুব দ্রুত সময়ের মধ্যে অপসারণ করা হবে।
প্রাইভেট ডিটেকটিভ/২৭ ডিসেম্বর ২০১৯/ইকবাল